সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশের আকাশে জমেছে বজ্রমেঘ। বজ্রঝড়ে ঘটছে প্রাণহানি। গত দুই দিনে নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে বজ্রপাতে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতও হয়েছে বেশ কয়েকজন। এই ৩০ জনের মধ্যে ৫ জন রয়েছে নারায়ণগঞ্জের।
রোববার (২৯ এপ্রিল) বজ্রপাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর ২টার মধ্যে নারায়ণগঞ্জে ৫ জনসহ সারাদেশে বজ্রপাতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে হঠাৎ করে বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ায় এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া প্রাণহানি থেকে রক্ষায় সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
সারাবিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়েছে এবং বজ্রপাতের ঘটনা ঘটছে। তবে বজ্রপাতের পূর্বাভাস ছয় ঘণ্টা আগে আবহাওয়ার তথ্যে পাওয়া যাবে। এছাড়া ‘১০৯৪১’ নম্বরে কল করে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বজ্রপাতের তথ্য পাওয়া যাবে।
২০১৬ সালের ২৭ আগস্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে। সেইবার বজ্রপাতে ১৭ জন প্রাণ হারান।
সম্প্রতি বজ্রপাতে ব্যাপক প্রাণহানির মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং আবহাওয়া অধিদফতর বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে। বজ্রপাতে ব্যাপক প্রাণহানির কারণে নারায়ণগঞ্জবাসীর মধ্যে ব্যাপক আতংক বিরাজ করছে। বিগত বছরের চেয়ে এ বছরের শুরুতেই নারায়ণগঞ্জে বজ্রপাতে নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন নারায়ণগঞ্জে বজ্রপাত বৃদ্ধির অন্যতম কারণ অপরিকল্পিত শিল্পায়ণ ও নগরায়ণ।নাগরিক সচেতনতার মাধ্যমে এই দূর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
বজ্রপাতে করণীয়:
আকাশে ঘনকালো মেঘ দেখা দিলে বজ্রপাতের আশংকা তৈরি হয়। ৩০-৪৫ মিনিট বজ্রপাত স্থায়ী হয়, এ সময়ে ঘরে অবস্থান করাই শ্রেয়।
ঘনকালো মেঘ দেখা দিলে খুব প্রয়োজন হলে রাবারের জুতা পায়ে বাইরে যাওয়া যেতে পারে।
বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা, খোলা মাঠ বা উঁচু স্থানে থাকবেন না।
এ সময়ে ধানক্ষেত বা খোলা মাঠে থাকলে তাড়াতাড়ি হাঁটু গেড়ে, কানে আঙুল দিয়ে, মাথা নিচু করে বসে পড়ুন।
যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। টিনের চালা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।
উঁচু গাছপালা, বৈদ্যুতিক তার বা ধাতব খুঁটি, মোবাইল টাওয়ার থেকে দূরে থাকুন।
বজ্রপাতের সময় গাড়ির ভেতরে অবস্থান করলে গাড়ির ধাতব অংশের সঙ্গে শরীরের সংযোগ ঘটাবেন না। সম্ভব হলে গাড়িটি নিয়ে কোনো কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন।
বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি বা বারান্দায় থাকবেন না।
বাড়ির জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভিতরে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম থেকে দূরে থাকুন।
মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ল্যান্ডফোন, টিভি, ফ্রিজসহ সব বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন এবং এগুলো বন্ধ রাখুন।
এ সময়ে ধাতব হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করবেন না। প্রয়োজনে প্লাস্টিকের অথবা কাঠের হাতলযুক্ত ছাতা ব্যবহার করতে পারেন।
খোলা মাঠে খেলাধুলা থেকে বিরত থাকুন।
বজ্রপাতের সময় ছাউনিবিহীন নৌকায় মাছ ধরতে যাবেন না, তবে এ সময় নদীতে থাকলে নৌকার ছাউনির নিচে অবস্থান করুন।
বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না।
প্রতিটি ভবনে বজ্র নিরোধক দ- স্থাপন নিশ্চিত করুন।